Header Ads

গর্ভকালীন অবস্থায় যে ১০টি খাবার নারীদের খেতে নেই !

গর্ভকালীন সময়ে মা এবং শিশুর সুস্থতার জন্য সঠিক পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই সময়ে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা ভালো, কারণ এই খাবার গুলো মায়ের এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আজকের আলোচনায় আমি আপনাদের দেখাবো এমন ১০টি খাবার যেগুলো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের খেতে নেই। 


১. কাঁচা বা আধা-সিদ্ধ মাংস ও মাছ:

গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা আধা-সিদ্ধ মাংস ও মাছ খাওয়া নিষেধ করার প্রধান কারণ হলো এতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, পরজীবী, এবং ভাইরাসের কারণে খাবারবাহিত সংক্রমণ ঘটতে পারে, যা মা এবং অনাগত শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। কাঁচা বা আধা-সিদ্ধ মাংস ও মাছের মধ্যে সালমোনেলা, ই.কোলাই, লিস্টেরিয়া, এবং টক্সোপ্লাজমা গন্ডি নামক ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী থাকতে পারে। এগুলো সংক্রমণের কারণ হয়ে উঠতে পারে, যা খাবারবাহিত অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে এবং গর্ভাবস্থায় জটিলতা ঘটাতে পারে।

টক্সোপ্লাজমা গন্ডি নামক একটি পরজীবী কাঁচা মাংসে থাকতে পারে। এটি গর্ভবতী মহিলার শরীরে প্রবেশ করলে গর্ভস্থ শিশুর বিকাশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে এবং এমনকি গর্ভপাত বা মৃত শিশুর জন্মও ঘটাতে পারে। লিস্টেরিয়া নামক একটি ব্যাকটেরিয়া অপর্যাপ্তভাবে রান্না করা মাংস ও মাছের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে। এই সংক্রমণটি গর্ভাবস্থায় মারাত্মক হতে পারে এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

কিছু কাঁচা মাছ, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ, পারদ ধারণ করতে পারে। পারদ স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

২. কাঁচা ডিম:

কাঁচা ডিমের মধ্যে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা হজমতন্ত্রে সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে ডায়রিয়া, বমি, জ্বর, পেটের ব্যথা, এবং পানিশূন্যতা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় এই ধরনের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে, কারণ এর প্রভাব সরাসরি অনাগত শিশুর উপর পড়তে পারে।

সালমোনেলা সংক্রমণের ফলে বমি এবং ডায়রিয়ার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা ও অপুষ্টি হতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর জন্য ক্ষতিকর। যদিও সালমোনেলা সংক্রমণ সাধারণত শিশুর ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে না, তবুও এটি মাতৃস্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে গর্ভাবস্থার জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন প্রিম্যাচিউর লেবার বা অকাল গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।

৩. আনপাস্তুরিত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য: 

লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনস নামক ব্যাকটেরিয়া আনপাস্তুরিত দুধ এবং তার থেকে তৈরি পণ্যে থাকতে পারে। লিস্টেরিয়াসিস সংক্রমণ গর্ভবতী নারীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ এটি প্লাসেন্টার মাধ্যমে শিশুর শরীরে পৌঁছে গিয়ে গর্ভপাত, মৃত শিশুর জন্ম, বা প্রিম্যাচিউর লেবারের ঝুঁকি বাড়ায়।

গর্ভাবস্থায় নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়, ফলে তারা সংক্রমণের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠেন। আনপাস্তুরিত পণ্যগুলোতে থাকা ব্যাকটেরিয়া সহজেই মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। আনপাস্তুরিত দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যগুলোতে ই.কোলাই এবং সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা খাবারবাহিত রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই সংক্রমণগুলো গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং ডায়রিয়া, পেটের ব্যথা, জ্বর, এবং পানিশূন্যতা ঘটাতে পারে।

৪. অতিরিক্ত ক্যাফেইন:

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ক্যাফেইন খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি মা ও অনাগত শিশুর স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণের ফলে শিশুর জন্মের সময় ওজন কম হতে পারে। কম ওজনের শিশুরা পরবর্তীতে শারীরিক ও মানসিক সমস্যার শিকার হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে গর্ভাবস্থায় উচ্চ মাত্রার ক্যাফেইন গ্রহণ গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ক্যাফেইন রক্তনালীগুলিকে সংকুচিত করে এবং প্লাসেন্টায় রক্তপ্রবাহে প্রভাব ফেলে, যা গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ক্যাফেইন ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে, যার ফলে শরীর থেকে দ্রুত পানি বেরিয়ে যায়। এটি পানিশূন্যতার কারণ হতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।


গর্ভস্থ শিশুর শরীরে ক্যাফেইন প্রবেশ করলে তা শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ও হৃদপিণ্ডের বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। শিশুর শরীরে ক্যাফেইনকে ভেঙে ফেলার ক্ষমতা কম থাকে, যার ফলে এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন মায়ের ঘুমের মান কমিয়ে দিতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় বিশ্রামের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মায়ের পর্যাপ্ত বিশ্রাম না হলে তা গর্ভাবস্থার অন্যান্য জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।

৫. মার্কারি সমৃদ্ধ মাছ:

মার্কারি বা পারদ সমৃদ্ধ মাছ গর্ভাবস্থায় খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে থাকা উচ্চমাত্রার পারদ গর্ভস্থ শিশুর বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র খুব দ্রুত বিকাশ লাভ করে। উচ্চ মাত্রার পারদ এই বিকাশকে ব্যাহত করতে পারে, যার ফলে শিশুর মানসিক বিকাশ, ভাষার দক্ষতা, এবং শিখন ক্ষমতায় সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পারদের সংস্পর্শে আসা শিশুরা পরবর্তীতে স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ, এবং সমন্বয় দক্ষতায় ঘাটতির শিকার হতে পারে। পারদ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং গর্ভাবস্থায় এটি মাতৃস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে প্রিম্যাচিউর লেবার বা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

কিছু মাছের মধ্যে পারদের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • শার্ক
  • সোর্ডফিশ
  • কিং ম্যাকারেল
  • টাইলফিশ

৬. অতিরিক্ত লিভার বা লিভারজাত খাবার:

লিভার বা লিভারজাত খাবারে উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক ভিটামিন A (রেটিনল) থাকে, যা গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে জন্মগত ত্রুটি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে অতিরিক্ত ভিটামিন A এর প্রভাব শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিকাশে ক্ষতিকর হতে পারে।

গরু, মুরগি বা অন্য কোনো প্রাণীর লিভারে প্রাকৃতিকভাবেই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A থাকে। এ কারণে নিয়মিত বা অতিরিক্ত পরিমাণে লিভার খেলে শরীরে ভিটামিন A এর পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা মা ও শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।


গর্ভাবস্থায় ভিটামিন A এর মাত্রা সীমিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। গর্ভবতী নারীদের জন্য প্রতিদিনের ভিটামিন A গ্রহণের মাত্রা ২,৫০০ থেকে ৩,০০০ IU এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। লিভারজাত খাবার খেলে এই মাত্রা সহজেই অতিক্রম হতে পারে।

৭. অলিভ সালাদ বা হিমায়িত খাবার:

গর্ভাবস্থায় অলিভ সালাদ এবং হিমায়িত (frozen) খাবার খাওয়া নিয়ে কিছু সতর্কতা প্রয়োজন। লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনস একটি ব্যাকটেরিয়া যা হিমায়িত খাবার বা প্রস্তুত করা সালাদে থাকতে পারে। লিস্টেরিয়াসিস নামক এই সংক্রমণ গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ এটি গর্ভস্থ শিশুর বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এবং প্রিম্যাচিউর লেবার ঘটাতে পারে। প্রস্তুত করা সালাদ বা হিমায়িত খাবারগুলোতে যদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা হয় বা পুনরায় উত্তপ্ত না করা হয়, তবে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

অলিভ সালাদ বা অন্যান্য প্রস্তুত খাবারগুলো প্রায়ই রেস্টুরেন্ট বা ডেলি (deli) থেকে কেনা হয়, যেখানে সেগুলো তৈরি এবং সংরক্ষণের সময়ে জীবাণু দ্বারা দূষিত হতে পারে। এই খাবারগুলোতে সালমনেলা, ই.কোলাই এবং অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যা গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

হিমায়িত খাবারগুলো দীর্ঘ সময় ফ্রিজে রেখে পুনরায় গরম করার সময় যদি সঠিকভাবে উত্তপ্ত না করা হয়, তবে ব্যাকটেরিয়া জীবিত থাকতে পারে এবং খাদ্যবাহিত রোগের কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় এই ধরনের সংক্রমণ মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

হিমায়িত এবং প্রি-প্যাকেজড খাবারগুলোতে প্রিজারভেটিভ এবং উচ্চমাত্রার সোডিয়াম থাকতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গ্রহণ করা ঠিক নয়। অতিরিক্ত সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপ এবং পানি জমার (edema) সমস্যা বাড়াতে পারে।

৮. প্রক্রিয়াজাত বা আনপ্যাকেটেড সি-ফুড:

গর্ভাবস্থায় প্রক্রিয়াজাত বা আনপ্যাকেটেড সি-ফুড seafood খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে খাবারবাহিত রোগের ঝুঁকি এবং ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি থাকতে পারে। লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনস নামক ব্যাকটেরিয়া প্রক্রিয়াজাত সি-ফুডে প্রায়ই পাওয়া যায়। এই ব্যাকটেরিয়া গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ এটি প্লাসেন্টার মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং জন্মগত ত্রুটি, গর্ভপাত, বা প্রিম্যাচিউর লেবারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়াও, প্রক্রিয়াজাত এবং আনপ্যাকেটেড সি-ফুডে সালমোনেলা এবং ই.কোলাই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে, যা খাবারবাহিত রোগের কারণ হতে পারে।

কিছু প্রক্রিয়াজাত সি-ফুডে পারদ (মার্কারি) এবং অন্যান্য বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে, যা গর্ভস্থ শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। বিশেষ করে সামুদ্রিক সি-ফুডে পারদের মাত্রা বেশি থাকে। প্রক্রিয়াজাত সি-ফুডে কিছু পরজীবী থাকতে পারে, যা মানব শরীরে প্রবেশ করলে পেটের ব্যথা, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য পরজীবী সংক্রমণের কারণ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় এই ধরনের সংক্রমণ মা এবং শিশুর জন্য ক্ষতিকর।

৯. অতিরিক্ত মশলাযুক্ত এবং ভাজা খাবার:

অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার প্রায়ই অম্বল, গ্যাস, বুক জ্বালাপোড়া এবং অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এমনিতেই হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা হয়, এবং মশলাযুক্ত খাবার এটি আরও বাড়িয়ে দেয়। ভাজা খাবারগুলোতে অনেক সময়ে তেল এবং ফ্যাট বেশি থাকে, যা হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং পেটে অস্বস্তি ও ফুলাভাব সৃষ্টি করে।

গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলারাই মর্নিং সিকনেস বা বমিভাব অনুভব করেন, যা মশলাযুক্ত খাবারের কারণে আরও বেড়ে যেতে পারে। মশলার ঝাঁঝ এবং ঘ্রাণ বমি ভাবকে উস্কে দিতে পারে এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।

ভাজা খাবারগুলিতে উচ্চমাত্রার ফ্যাট ও ক্যালোরি থাকে, যা অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি ঘটায়। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া (pre-eclampsia) এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই ধরনের খাবারগুলোতে প্রায়ই ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং গর্ভস্থ শিশুর বিকাশের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে, যা অতিরিক্ত ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পানি পানের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ পানিশূন্যতা মা এবং শিশুর উভয়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

ভাজা এবং মশলাযুক্ত খাবারগুলিতে প্রায়ই উচ্চমাত্রার সোডিয়াম বা লবণ থাকে, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে এবং প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া সহ অন্যান্য জটিলতার কারণ হতে পারে।

১০. অ্যালকোহল:

গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল খাওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং এটি গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। অ্যালকোহলের প্রভাবে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক এবং শরীরের বিকাশে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। ফেটাল অ্যালকোহল সিনড্রোম একটি ক্লিনিকাল অবস্থা, যা অ্যালকোহলের কারণে শিশুর মধ্যে শারীরিক এবং মানসিক ত্রুটি সৃষ্টি করে। এর ফলে শিশুর মানসিক বিকাশে সমস্যা, আচরণগত সমস্যা, এবং শারীরিক ত্রুটি দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল গ্রহণ করার ফলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে। গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সমস্যা হতে পারে, যা গর্ভপাতের কারণ হতে পারে। গর্ভস্থ শিশুর উপর অ্যালকোহলের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থাকতে পারে, যা তার পরবর্তী জীবনে আচরণগত সমস্যা, মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা এবং শারীরিক অক্ষমতার কারণ হতে পারে।


গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে শিশুর স্নায়ুতন্ত্র এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিকাশে সমস্যা হতে পারে, যা পরবর্তীতে মানসিক ও শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালকোহল গর্ভস্থ শিশুর অন্ত্র, হৃদপিণ্ড, এবং অন্যান্য অঙ্গের বিকাশে প্রভাব ফেলে, যার ফলে জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।

গর্ভাবস্থায় এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলা এবং সঠিক পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা মায়ের এবং শিশুর সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভকালীন সময়ে খাদ্যাভ্যাস নিয়ে যেকোনো প্রশ্ন থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.