Header Ads

লাল মাংস আমাদের শরীরের কী কী ক্ষতি করে !

লাল মাংস যেমন গরুর মাংস, ভেড়ার মাংস, খাসির মাংস ইত্যাদি আমাদের খাদ্যাভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে, কারণ এটি প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ভিটামিন বি১২ ইত্যাদির সমৃদ্ধ উৎস। তবে, অতিরিক্ত পরিমাণে বা নিয়মিতভাবে লাল মাংসের অতিরিক্ত সেবন শরীরের জন্য কিছু ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। নিচে লাল মাংসের অতিরিক্ত সেবনের কিছু সম্ভাব্য ক্ষতি তুলে ধরা হল:

১. হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি:

লাল মাংসে উচ্চ পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা রক্তে লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (LDL) বা "খারাপ কোলেস্টেরল" বাড়াতে সহায়ক। যখন LDL কোলেস্টেরল বাড়ে, এটি ধমনীর দেয়ালে জমা হতে শুরু করে, যা অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বা ধমনীর সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে। অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস হলো হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের প্রধান কারণ। প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস, যেমন সসেজ, বেকন, এবং হ্যাম, উচ্চ পরিমাণে সোডিয়াম এবং প্রিজারভেটিভস যেমন নাইট্রেট এবং নাইট্রাইট ধারণ করে। অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। উচ্চ রক্তচাপ দীর্ঘমেয়াদে হৃদপিণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং হৃদরোগের কারণ হতে পারে।


লাল মাংস হজমের সময় অন্ত্রে কিছু ব্যাকটেরিয়া এমন একটি রাসায়নিক তৈরি করতে পারে, যাকে ট্রাইমিথাইলঅ্যামিন-এন-অক্সাইড (TMAO) বলা হয়। TMAO রক্তে চর্বি জমাতে সহায়তা করে এবং রক্তনালী সংকুচিত করতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। লাল মাংসের অতিরিক্ত সেবন শরীরে প্রদাহ বৃদ্ধি করতে পারে, যা হৃদরোগের প্রধান কারণগুলির একটি। প্রদাহ দীর্ঘমেয়াদে ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে দেয় এবং রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

লাল মাংসের অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ ওজন বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পারে। স্থূলতা এবং ওজন বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য মেটাবলিক সমস্যাগুলি যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, যা সরাসরি হৃদরোগের সাথে যুক্ত। লাল মাংসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কম থাকে, যা রক্তনালীর ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে না। সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়া রক্তনালীকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে, যা লাল মাংসে অনুপস্থিত।

২. ক্যান্সারের আশংকা:

প্রক্রিয়াজাত লাল মাংসে প্রিজারভেটিভস হিসেবে নাইট্রেট এবং নাইট্রাইট ব্যবহার করা হয়, যা রান্নার সময় নাইট্রোসামাইন নামক কার্সিনোজেনিক ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক তৈরি করতে পারে। এই রাসায়নিকগুলো কোলোরেকটাল ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। লাল মাংস উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা হলে, যেমন গ্রিল করা বা বারবিকিউ করা, হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইনস (HCAs) এবং পলিসাইক্লিক অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বনস (PAHs) তৈরি হয়। এই রাসায়নিকগুলোও ক্যান্সারের কারণ হতে পারে, বিশেষ করে কোলন এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের।

লাল মাংসে উচ্চ পরিমাণে হিমো আয়রন থাকে, যা শরীরে মুক্ত র‍্যাডিকেল তৈরিতে সহায়ক হতে পারে। এই মুক্ত র‍্যাডিকেলগুলো কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। লাল মাংসের অতিরিক্ত সেবন শরীরে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়াতে পারে, যা কোষের ক্ষতি এবং ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। প্রদাহের কারণে কোষগুলোর ডিএনএ পরিবর্তিত হতে পারে এবং তা ক্যান্সার কোষে পরিণত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ক্যান্সার গবেষণা সংস্থা (IARC) প্রক্রিয়াজাত লাল মাংসকে "গ্রুপ ১ কার্সিনোজেন" হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে, যার অর্থ এটি মানুষের জন্য ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। সতেজ লাল মাংসকে "গ্রুপ ২এ কার্সিনোজেন" হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা সম্ভবত ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।

৩. টাইপ ২ ডায়াবেটিস:

লাল মাংসে উচ্চ পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স সৃষ্টি করতে পারে। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স টাইপ ২ ডায়াবেটিসের প্রধান কারণগুলির একটি। যখন শরীর ইনসুলিনকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না, তখন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা ডায়াবেটিসের দিকে নিয়ে যায়। প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ানোর সাথে আরও বেশি সম্পর্কিত। এই মাংসগুলোতে প্রিজারভেটিভস, সোডিয়াম এবং অন্যান্য রাসায়নিক যোগকরা হয় যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রক্রিয়াজাত মাংসের সেবন ইন্সুলিনের কার্যকারিতা হ্রাস করে এবং প্যাংক্রিয়াসে ইনসুলিন উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

লাল মাংসে হিমো আয়রনের উচ্চ মাত্রা থাকে, যা শরীরে ফ্রি র‍্যাডিকেলের উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারে। ফ্রি র‍্যাডিকেল অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে, যা ইনসুলিন সেলুলার কার্যকারিতাকে ক্ষতি করতে পারে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। লাল মাংসে থাকা কিছু অ্যামাইন এসিড যেমন লারিন, লাইনাইন, এবং প্রোলাইন ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমিয়ে দিতে পারে। ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমে গেলে শরীর ইনসুলিনকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না, যা গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করে।

৪. কিডনি এবং লিভারের উপর চাপ:

লাল মাংসে প্রোটিনের উচ্চ মাত্রা থাকে, এবং অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। কিডনিকে অতিরিক্ত প্রোটিন প্রসেস করতে হয়, যা কিডনি ফাংশনে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। কিডনির সমস্যা থাকলে প্রোটিনের অতিরিক্ত গ্রহণ আরও ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনি বিকলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

লাল মাংসে পিউরিন নামক একটি উপাদান থাকে, যা ইউরিক এসিডে রূপান্তরিত হয়। ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি হলে এটি কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে, যা কিডনি ফাংশনে সমস্যা সৃষ্টি করে। প্রক্রিয়াজাত লাল মাংসে উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ বাড়াতে সহায়ক। উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

লাল মাংসে উচ্চ পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা লিভারে ফ্যাট জমা করার প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যা দীর্ঘমেয়াদে লিভারের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। প্রক্রিয়াজাত লাল মাংসে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ এবং প্রিজারভেটিভস লিভারের জন্য টক্সিক হতে পারে। লিভারকে এই টক্সিনগুলো প্রসেস করতে কষ্ট হয়, যা লিভারের ক্ষতি করতে পারে এবং লিভারের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।

প্রোটিনের বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়, যা লিভারের মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। লাল মাংসের অতিরিক্ত সেবনে বেশি অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়, যা লিভারের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

৫. ওজন বৃদ্ধির আশংকা:

লাল মাংসে সাধারণত বেশি ক্যালোরি এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ হলে শরীর অতিরিক্ত ক্যালোরিকে চর্বিতে রূপান্তরিত করে, যা ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়ক হয়। স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে চর্বি জমা করার প্রবণতা বাড়ায়, বিশেষ করে পেট এবং কোমরের আশেপাশে। প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস, যেমন সসেজ, বেকন, হ্যাম, ইত্যাদিতে অতিরিক্ত চিনি, সোডিয়াম এবং ফ্যাট যোগ করা হয়, যা ক্যালোরির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

প্রক্রিয়াজাত মাংসে প্রিজারভেটিভস এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা শরীরে দ্রুত চর্বি জমাতে সহায়তা করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। লাল মাংসের অতিরিক্ত সেবনে শরীরে বিপাকীয় কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবারগুলো হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং বিপাকের গতি কমিয়ে দেয়, যা ওজন বৃদ্ধি করে। বিপাকীয় কার্যকারিতা কমে গেলে শরীরের চর্বি পোড়ার হারও কমে যায়, যা ধীরে ধীরে ওজন বাড়ায়।

লাল মাংসে থাকা প্রোটিন এবং ফ্যাট অনেক সময় খিদে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হলেও, অতিরিক্ত ফ্যাট শরীরের হরমোন নিঃসরণের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যখন শরীর অতিরিক্ত ফ্যাট এবং ক্যালোরি গ্রহণ করে, তখন এটি গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সমস্যার সৃষ্টি করে এবং বারবার খিদে পেতে থাকে।

৬. প্রদাহ বৃদ্ধি:

কিছু গবেষণা দেখায় যে অতিরিক্ত লাল মাংসের সেবন শরীরে প্রদাহের স্তর বাড়াতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। লাল মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে, যা শরীরে প্রদাহ বৃদ্ধি করতে পারে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি গ্রহণ করলে শরীরে ইনফ্ল্যামেটরি সাইটোকাইনসের উৎপাদন বেড়ে যায়, যা প্রদাহের কারণ হতে পারে। উচ্চ স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা ধমনী এবং রক্তনালীর প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়, যা হৃদরোগ এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত অসুখের ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রক্রিয়াজাত লাল মাংসে নাইট্রেট, নাইট্রাইট, এবং অন্যান্য প্রিজারভেটিভ থাকে, যা শরীরে প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া বাড়াতে পারে। প্রক্রিয়াজাত লাল মাংসের রাসায়নিক পদার্থগুলো শরীরের কোষের জন্য টক্সিক হতে পারে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করে।

৭. পরিবেশগত প্রভাব:

যদিও এটি সরাসরি শরীরের ক্ষতি নয়, কিন্তু অতিরিক্ত লাল মাংসের উৎপাদন পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যেমন গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমন, যা দীর্ঘমেয়াদে মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই সমস্যাটি বিশেষ করে উন্নত বিশ্বে দেখা যায়। তবে আজকাল এটি উন্নয়নশীল দেশগুলো বা অনুন্নত দেশগুলোতেও দেখা যাচ্ছে। গ্রীনহাউস গ্যাসের কারণে বর্তমানের পৃথিবী এবং সেখানের অধিবাসীরা রয়েছে নানান ঝুঁকিতে।

পরিবেশগত উন্নতি এবং মানুষের সুস্থ্য স্বাভাবিক শরীরের উন্নতির জন্য চিকিৎসকরা লাল মাংস পরিহার করতে উপদেশ দেন। এই ধরনের মাংসে উপকার রয়েছে এটা সত্যি, তবে তাতে উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিও রয়েছে। আর উপকারের চেয়ে ক্ষতির ভাগই বেশি হিসেবে ধরা হয়।

সুস্থ জীবনযাপনের জন্য পরামর্শ:

• মাংসের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন: সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার লাল মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে অতিরিক্ত এড়িয়ে চলুন।

• প্রক্রিয়াজাত মাংস কম খান: সসেজ, হ্যাম, বেকন ইত্যাদির সেবন কমান।

• সতেজ এবং নিরপেক্ষ রান্না করুন: গ্রিল, বেক, বা সেদ্ধ করার মাধ্যমে মাংস রান্না করুন, ভাজা এড়িয়ে চলুন।

• বিকল্প খুঁজুন: মাছ, মুরগি, ডাল, বীনস ইত্যাদি প্রোটিনের উৎস খুঁজুন যা স্বাস্থ্যকর।

• সুষম খাদ্য গ্রহণ: সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, সম্পূর্ণ শস্য এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি খাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিন।

লাল মাংসের সেবন স্বাস্থ্যকর হতে পারে যদি তা পরিমিত পরিমাণে এবং সঠিকভাবে খাওয়া হয়। তবে, অতিরিক্ত বা নিয়মিতভাবে লাল মাংসের অতিরিক্ত সেবন শরীরের জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। একটি সুষম এবং বৈচিত্র্যময় খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.